বাংলাদেশে কাঁচা মরিচের দাম বাড়ার কারন কি? গোপন রহস্য ফাঁস
যেকোন জিনিষের দাম কমা বা বাড়ার পেছনে চাহিদা বা যোগানের একটি সম্পর্কও রয়েছে। বইপুস্তক থেকে আমরা জেনেছি, কোন জিনিষের চাহিদার তুলনায় যোগান বেশি হলে দাম কম হয়। কিন্তু আমাদের দেশে তো আর কোন সুত্র প্রযোজ্য হয়না! কারন এখানে একদল অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর কৃত্তিম সংকট তৈরি করার মাধ্যমে বাজারে রাতারাতি নির্দিষ্ট কোন পণ্যের দাম বৃদ্ধি করে ফেলে।
পূর্বের ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, কোন ধর্মীয় উৎসব আমেজের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে ওই উৎসবের সাথে সম্পৃক্ত পণ্যসামগ্রীর দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যায়। যেমনঃ কোরবানি ঈদের আগে গরুর গোস্ত, আদা, পেয়াজ, লবন ইত্যাদি। আবার কিছুদিন আগে লোডশেডিং যখন সবাই নাজেহাল, ঠিক তখনই ব্যাটারি চালিত ফ্যানের দাম অস্বাভাবিক ভাবেই বৃদ্ধি পেল। ঠিক এমনটাই ঘটেছে কাচা মরিচের সাথে।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা এই ব্যাপারে কি বলছেন
হটাৎ কেন এভাবে কাচা মরিচের দাম বাড়ল, এমন প্রশ্নে বেশিরভাগ পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন; দেশে কাচা মরিচের উৎপাদন কম হওয়ায় তাদের বেশি দামে মরিচ ক্রয় করতে হচ্ছে। তাদের এই বক্তব্যটির সত্যতা কিছুটা হলেও খুঁজে পাওয়া যায়, দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় ১৭ জুলাই ২০২২ সালের একটি প্রতিবেদনে।
যেখানে লেখা ছিল “প্রচণ্ড খরায় দেশে কমে গেছে কাঁচা মরিচের উৎপাদন। দেশের অন্যতম কাঁচা মরিচ উৎপাদনকারী এলাকা হচ্ছে পশ্চিমের ছয় জেলা। হঠাৎ করে কাঁচা মরিচের ফলন ব্যাপকভাবে কমে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। কোথাও কোথাও প্রতি কেজির দাম ২০০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। অথচ এ সময় কাঁচা মরিচের ভরা মৌসুম। অন্যান্য বছর এ সময় মরিচের এত দরপতন হয় যে, খেত থেকে মরিচ তুলে হাটে বিক্রির পর চাষির লাভ থাকে না।”
যদিও প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়, ২০২২ সালের জুলাই মাসে। কিন্তু এই বছরেও এই সময়ে আমাদের দেশ প্রচণ্ড গরম ও খরার সম্মুক্ষিন হয়, আর যার কারনে কাচা মরিচের উৎপাদন কম হওয়ার একটা আশঙ্কা থেকেই যায়।
বাংলাদেশে কাঁচা মরিচের দাম বাড়ার কারন কি
ভারত থেকে কেন কাচা মরিচ আমদানি করা হচ্ছেনা
প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সঙ্গনিরোধ শাখার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাজারে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ার পর মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কথা বলে আমাদের প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বলেন। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি (আইপি) দেওয়া হয়েছে।’
আমদানিকারকেরা বলছেন, বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী ভারতের সীমান্ত এলাকার বাজারগুলোয় প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে রয়েছে। তাতে ভারতীয় কাঁচা মরিচ দেশে এলে সব খরচ বাদ দিয়ে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দামর ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে চলে আসবে।
ভবিষ্যতে নিজেকে এমন পরিস্থিতি থেকে রক্ষায় করনিয় কি?
ভবিষ্যতে এমন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষের দাম বাড়াটা স্বাভাবিক। তাই এখন থেকেই যদি আপনার গ্রামে খালি জায়গা থাকে সেটাকে অযত্নে ফেলে না রেখে চাষাবাদের উপযোগী করে পেয়াজ, আদা, রসুন, মরিচ, ধনিয়া পাতা ইত্যাদি চাষ করতে পারেন। এতে যেমন পরিবারের খাবারের চাহিদা পুরন করা যাবে তেমনই দেশের খাদ্যের চাহিদাও পুরন করা যাবে।
রেফারেন্স লিঙ্ক ঃ
Leave a Reply